মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি

সাইফুর রহমান মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সিলেটে একটা সংবর্ধনা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। তিনি তো যাবেন না। শত অনুরোধের পরে তিনি গেলেন সেখানে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ডায়াসে দাঁড়িয়ে বললেন,

“আমি সাধারনত সংবর্ধনা টম্বর্ধনা নেই না। কারন এ ধরনের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো যাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয় তার স্তুতি গাওয়া হয়। তার নামে অতিরিক্ত প্রসংশা করা হয় এবং সবশেষে কিছু দাবী দাওয়া উত্থাপন করা হয়। তারপর প্রশংসিত ব্যাক্তিকে সেইসব দাবী দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিতে হয় তা তার সাধ্যের ভেতরে থাকুক বা না থাকুক।

ঐ সভার সবাই কেমন জানি একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। কথা এক বিন্দুও মিথ্যা নয়। তারপর সবাইকে বললেন দাবী দাওয়া আপনারা আপনাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে অবশ্য আমার কাছে উত্থাপন করবেন নিঃসন্দেহে। কিন্তু সেজন্য আমাকে সংবর্ধনা দিতে হবে না।

বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এবং আমৃত্যু স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইফুর রহমান একবার বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শনে গেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হেড অফিস যে কত বড় তা আপনারা যারা ওখানে এখনো যাননি তারা কল্পনাও করতে পারবেন না।

তো হাঁটতে হাঁটতে তিনি একটা রুমের ভেতরে ঢুকলেন। সুবিশাল মনোরম পরিবেশের রুমটি দেখে তিনি একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলেন এ রুমটি কার অধিনে? একজন ভদ্রলোক বললেন স্যার এটাতে আমি বসি।

সাইফুর রহমান আরো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস তোমার কাজ কি? ভদ্রলোক বললেন স্যার আমি একজন ডাইরেক্টর (অথবা এ টাইপের কোন পোস্ট)।

সাইফুর রহমান ক্ষেপে গেলেন। রাগত স্বরে সবাইকে বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডাইরেক্টর কি এমন কাজ করেন যে তার রুম প্রধানমন্ত্রীর রুমের চেয়েও বড় হতে হবে। তার রুমে কেনো বড় বড় ৪টা এসি থাকবে?

এই সুবিশাল, মনোরম, ব্যায়বহুল রুম তো তার প্রয়োজন নেই। রাস্ট্রের টাকা পয়সা এমন অপরিমিতভাবে খরচ করার অধিকার কারো নেই।সবাইকে বললেন আমরা যদি রাস্ট্রের খরচ কমিয়ে না আনি তাহলে কে করবে?

পরবর্তীতে ঐ কর্মকর্তাকে ঐ রুম থেকেই সরিয়ে দেন সাইফুর রহমান।

এই সাইফুর রহমানরাই ছিলেন বিএনপির মন্ত্রী কিংবা বর্ষীয়ান নেতা।যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বোচ্চ সততার পরিচয় দিয়ে গেছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশ কেমন চালাবে অনেকে প্রশ্ন করেন বা মন্ত্রী কারা হবে;সে-ই উদাহরণতো সাইফুর রহমানরাই রেখে গেছেন।

আজ অনেকেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তি বিনাশ করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র আঁকছে,বিভিন্ন এম্বাসিতে ঘোরাঘুরি করতাছে কিন্তু তারা এই জাতীয়তাবাদী শক্তির শেকড় বাংলাদেশের কতো অনুমানই করতে পারছে না।

এই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্ম দেন জিয়া পরিবার আর সে-ই জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্য দেশজুড়ে লিগ্যাসি তৈরী করেন সাইফুর রহমান,তরিকুল ইসলাম,জমির উদ্দিন সরকার কিংবা ঐ আব্দুস সালাম তালুকদাররা।

জিয়া পরিবার কিংবা সাইফুর রহমান তরিকুল ইসলাম জমির উদ্দিন সরকার সালাম তালুকদারদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এইভাবে বিনাশ করা যাবে না।

এর আগেও বহুজন বহুবার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিনাশ করার জন্য এসেছিলো সে-ই তারাই আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক আর বিএনপি এখনো স্বমহিমায় বাংলাদেশে বিরাজ করে যাচ্ছে…