মো : কামরুজ্জামান কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের দুধকুমড়া গ্রামে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একই পরিবারের দুই নারী ও এক পুরুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এলাকাজুড়ে এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী মোছাঃ শ্যামলী খাতুন (২৪) বাঁশগ্রাম পুলিশ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন তার চাচা মোঃ শফিকুল ইসলাম (৫৫), চাচি ঝনু খাতুন (৪৫), ভাই আশিকুর রহমান (৩০), ভাবি মোছাঃ ওমি (২৭) ও শিখা খাতুন (১৮)। জমির ভাগ চাওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সঠিক ভাগ না দিয়ে উল্টো বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা পর্যন্ত বন্ধ করে দেন। ফলে শ্যামলী ও তার পরিবার বাধ্য হয়ে অন্যের জমি ব্যবহার করে চলাফেরা করছিলেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ২৬ আগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এবং ৪ সেপ্টেম্বর সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে একই পরিবারের বিবাদীরা পরিকল্পিতভাবে শ্যামলী খাতুন (২৩), তার বাবা মজিবর শেখ (৪৬) ও মা সুমি খাতুনকে (৩৮) রাস্তার ওপর ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এসময় তাদের মাথা ফেটে যায়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তক্ষরণ হয় এবং তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী শ্যামলী খাতুন দাবি করেন, হামলাকারীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করেছে। শুধু তাই নয়, ঘটনার পর থেকে তারা জীবননাশের হুমকির মুখে রয়েছেন। তিনি আরও জানান, এর আগে একই পরিবারের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে তারা প্রশাসনিক সুরক্ষার অভাবে দিন কাটাচ্ছেন আতঙ্কে।
অন্যদিকে, স্থানীয় সূত্র জানায়, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করেই এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দীর্ঘদিন ধরে জমির ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। একাধিকবার গ্রাম্যভাবে মীমাংসার চেষ্টা হলেও তাতে কোনো সমাধান আসেনি।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাংবাদিকদের জানান, “এখনও এ ঘটনায় আমাদের কাছে কোনো নতুন লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে আগের তিনটি অভিযোগের বিষয় আমরা জানি এবং আইনগতভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করছে, তারা পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া নিরাপদে বসবাস করতে পারছেন না। তারা ন্যায়বিচার ও নিজেদের প্রাণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ কামনা করেছেন।