
স্টাফ রিপোর্টার
যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নে একটি বন্ধ মাদ্রাসাকে ভুয়া নথিপত্র তৈরি করে সরকারি অনুমোদন দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম “মাগুরা পূর্বপাড়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা”, যা বহু বছর ধরে অচল থাকলেও কাগজে-কলমে সক্রিয় দেখিয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মাদ্রাসার জমিদাতা পরিবারের সদস্য মো. ইদ্রীস আলী মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালে স্থানীয় উদ্যোগে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৮৪ সালের পর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
মো. ইদ্রীস আলী অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী, কথিত সভাপতি রুহুল আমীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম এবং একাডেমিক সুপারভাইজার মোসা আছমা খানসহ কয়েকজনের যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মাদ্রাসাটিকে সরকারি নিবন্ধনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে সরেজমিনে কথা বলে জানা গেছে, মাদ্রাসার কোনো ভবন নেই, নেই ক্লাসরুম। পুরো এলাকা ফাঁকা পড়ে আছে, আশপাশে মানুষ গোবরের বড়ে রোদে শুকাচ্ছে। অভিযুক্তদের পক্ষে দেখানো হয়েছে যে মাদ্রাসায় ১৭১ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠ নিচ্ছে, তবে বাস্তবে একজন শিক্ষার্থীও নেই।
মো. ইদ্রীস আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার দাদা নূর আলী সরদার মসজিদ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি দিয়েছেন। সেসব প্রতিষ্ঠান আজও ঠিকভাবে চলছে। কিন্তু এই মাদ্রাসা কখনোই চালু হয়নি। এখন কিছু ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া কাগজ তৈরি করে সরকারি অনুমোদন ও সুযোগ সুবিধা নিতে চাইছে। আমি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চাই।
প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী অভিযোগের সত্যতা আংশিক স্বীকার করে বলেন, ওখানে ক্লাস চলেনা, আগামী জানুয়ারি থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ সালাউদ্দীন দিপু বলেন আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। স্থানীয়রা এই ঘটনার বিষয়ে যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং মাদ্রাসার অনুমোদন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আশ্বাস চেয়েছেন।