
নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে জোট ও সমঝোতার আভাস মিলছে। নির্বাচনের আগে ভোট ও নির্বাচনের পর সরকারের গঠন—দুই বিষয়েই পর্দার আড়াল থেকে আলোচনা চালানো হচ্ছে।
গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নূর বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি, নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল যেন আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারে। এবং নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। বিএনপির জাতীয় সরকারের ঘোষণা সঙ্গে এর মিল আছে।”
নুরুল হক নূর আরও বলেন, “নির্বাচন কেবল সংকট সমাধানের পথ নয়। নির্বাচনের পরও দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অগ্রগতি বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সাংবাদিকদের বলেন, “রাজনীতিতে আলোচনা সবসময় ইতিবাচক। নির্বাচনের সময় এক ফরমেশন হবে। আমরা জাতীয় সরকার গঠন করবো, আপার হাউজ পরিচালনায় অংশ নেব। এটা জাতীয় কমিটমেন্টের সঙ্গে মিল রাখে।”
ভোট ও জোট নিয়ে রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী তিনটি প্রধান ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে:
১. বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট, যেখানে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো অংশ নেবে।
২. ধর্মভিত্তিক দলগুলোর জোট, যেখানে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ আটটি দল একত্রিত।
৩. তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর তৃতীয় শক্তি হিসেবে জোট গঠন।
ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতা আশরাফুল আলম বলেন, “নির্বাচনে প্রতিটি আসনে শুধু একজন প্রার্থী দাঁড়াবে, যাতে সব ইসলামপন্থি দল সমভাবে প্রতিনিধিত্ব পায়।”
এনসিপি নেতা আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “গতানুগতিক জোটের ধারায় এবার সম্ভব না। প্রত্যেক দলের নির্দিষ্ট মার্কা অনুযায়ী কৌশলগত অ্যালায়েন্স হবে। নির্বাচন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান—দুটোই আমাদের কৌশল নির্ধারণ করবে।”
গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর আশা প্রকাশ করেন, দুটি প্রধান ফ্রন্ট—বিএনপি ও জামায়াত—মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তৃতীয় জোট থাকলেও ভবিষ্যত বোঝাপড়ার মাধ্যমে এসব ফ্রন্টের সঙ্গে সমঝোতা হবে।
জাতীয় পার্টির খণ্ডিত অংশও নতুন জোট গঠন করছে। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “নির্বাচন না হলেও স্বচ্ছ রাজনৈতিক কর্মসূচি জনগণের সামনে উপস্থাপন করাই আমাদের লক্ষ্য। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণে হবে, যাতে নির্বাচন পরবর্তী সরকার স্থিতিশীল থাকে।”
এছাড়া, বিএনপি ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও ২৮টি আসন ফাঁকা রেখেছে। দলীয় নেতারা জানান, জোটের শরিকদের সঙ্গে সমঝোতার জন্য এই আসনগুলো রাখা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা