
মোঃ কামাল হোসেন, অভয়নগর যশোর
দীর্ঘ কারাজীবন, কঠিন আন্দোলন আর দল সংগঠনে অদম্য ভূমিকার ধারক–বাহক রিজভী আহমেদ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যখনই কঠিন সময় অতিক্রম করেছে, তখন দলের অগ্রভাগে যিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন তিনি রুহুল কবির রিজভী। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে তিনি শুধু মুখপাত্রই নন; বরং বিএনপির প্রতিটি সংকটে মাঠে–ময়দানে উপস্থিত এক সংগ্রামী রাজনৈতিক নেতার প্রতিচ্ছবি। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা হিসেবে রিজভী দলের অভ্যন্তরীণ সংগঠন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কার্যক্রম এবং আন্দোলন-সংগ্রামের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রজীবন শুরু করা রুহুল কবির রিজভী ১৯৮০–র দশকে ছাত্রদল রাজনীতিতে সক্রিয় হন। পরে ধাপে ধাপে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি হন। ছাত্ররাজনীতি থেকে মূলধারায় উঠে এসে বিএনপির সংগঠনে নিজেকে একজন দক্ষ সাংগঠনিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। রাজপথের নেতা হিসেবে পরিচিত রিজভী বিএনপির আন্দোলনের প্রায় প্রতিটি ধাপে সামনের সারিতে দেখা যায়। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলনকালীন পরিস্থিতিতে তিনি বহুবার গ্রেফতার, আটক ও মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। তবুও তিনি দলীয় আদর্শ থেকে সরে আসেননি এটাই তাকে বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে আরও নির্ভরযোগ্য করে তুলেছে। বিএনপির সংকটময় সময়ে বিভিন্ন সমীকরণ, সমালোচনা ও বিভক্তির মুহূর্তেও রিজভী দলের পক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থান ধরে রেখেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির ভিত্তি শক্ত রাখা এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে সক্রিয় রাখায় রিজভীর ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে ধারাবাহিক। তাঁর নিরন্তর বক্তব্য, ব্রিফিং, প্রেস কনফারেন্স এবং রাজনৈতিক অবস্থান বিএনপির তৃণমূলের কাছে আস্থা তৈরি করেছে। দলের অনেক নেতার মতে, রিজভী এমন এক নেতা যিনি: বিপদের সময় অফিসে অবস্থান করে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। মাঠের রাজনীতিতে কর্মীদের পাশে থেকেছেন। সংগঠনের ভাঙন রোধে দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন, দলের নীতি-আদর্শ বজায় রাখতে আপসহীন থেকেছেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি যখন পুনর্গঠন ও নতুন কৌশল নির্ধারণের পথে, তখন অভিজ্ঞ ও দলবদ্ধতামূলক নেতৃত্ব হিসেবে রুহুল কবির রিজভীর উপস্থিতি দলকে নতুন পথে এগোতে সহায়ক হবে বলে দলীয় সূত্র মনে করছে। সংকট, আন্দোলন, গ্রেফতার, সংগঠন এই চার স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে রুহুল কবির রিজভী বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেকে এক অবিচল রাজনৈতিক চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।বিএনপির দীর্ঘসময়কার কঠিন পথচলায় তিনি পরিণত হয়েছেন কর্মীদের আস্থার জায়গায়, নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় এবং দলকে টিকিয়ে রাখার অন্যতম শক্তিতে।