অভয়নগর প্রতিনিধি
অবশেষে বহু অভিযোগ ও জনসাধারণের ক্ষোভের মুখে যশোরের অভয়নগর উপজেলার দুই বিতর্কিত কর্মকর্তা – উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নাজমুল হুদা এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মুশফিকুর রহমান – কে বদলি করা হয়েছে। সাংবাদিক লাঞ্ছনা থেকে শুরু করে নিম্নমানের সড়ক নির্মাণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই বদলি বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সাংবাদিক লাঞ্ছনা ও সড়কে দুর্নীতি পত্রিকার পাতায় যে নামটি ঘুরে ফিরে এসেছে বারবার, তিনি উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নাজমুল হুদা। গত ১৯ মার্চ বুধবার, ডুমুরতলা টু বেতভিটা সড়কে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তে আসেন যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু ইউনুস। তার উপস্থিতিতে সড়কে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা মিলেছে। এমনকি পরীক্ষার জন্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়।
এর আগে, এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সাংবাদিক তাওহীদ উসামাকে লাঞ্ছিত করার গুরুতর অভিযোগ উঠে আসে। এনটিভি অনলাইনের এ প্রতিনিধি সড়কের অনিয়ম নিয়ে বক্তব্য চাইলে তিনি বুম ও আইডি কার্ড কেড়ে নেন এবং অপমানজনক আচরণ করেন। এনটিভি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি দ্রুত প্রশাসনের নজরে আসে এবং নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। শেষমেশ নিজ দোষ স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন অভিযুক্ত প্রকৌশলী। পিআইও’র বিরুদ্ধে বহুমুখী অনিয়ম, বদলি চুয়াডাঙ্গায়
অপরদিকে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মুশফিকুর রহমানও ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রে। অভয়নগরের পাশাপাশি তিনি কেশবপুরেও দায়িত্ব পালন করতেন, এমনকি শ্রীধরপুর ইউনিয়নের প্রশাসনিক দায়িত্বও একসময় কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে উঠেছে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন, বরাদ্দের অপব্যবহার, এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগের একাধিক অভিযোগ। প্রশাসনের অবস্থান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা
বদলি আদেশে প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদাকে খুলনার কয়রা উপজেলায় এবং পিআইও মুশফিকুর রহমানকে চুয়াডাঙ্গায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে অভয়নগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল বলেন, “পিআইও এখানে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। চুয়াডাঙ্গা থেকে নতুন কর্মকর্তা এখানে আসবেন।”অবশেষে ন্যায়বিচারের প্রতিফলন
জনগণের দৃষ্টিতে, এটি যেন প্রশাসনের এক সাহসী পদক্ষেপ। বহুল আলোচিত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই বদলি যেন একটি বার্তা – কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে হয়তো এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো অভয়নগরে – যেখানে উন্নয়ন হবে স্বচ্ছতায়, আর দায়িত্ব পালন হবে জবাবদিহিতার আলোকে।